সবুজ রঙের ফিতা

কিছুদিন আগে একটা খবর পড়ছিলাম। গত বছর ২০২৩ এর সুন্দরী প্রতিযোগিতায় মিস ইউএসএ যিনি হয়েছিলেন তিনি তার অর্জনকৃত মুকুটটি ফেরত দিয়েছেন। কারন হিসেবে দেখিয়েছেন তার মানসিক অসুস্থতা, এই মুকুট ধরে রাখলে তিনি আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পড়বেন। এর কিছুদিন পরে, আরো একজন সুন্দরী যিনি মিস টিন ইউএসএ হয়েছিলেন তিনিও তার মুকুট বা টাইটেল ফেরত দিয়েছেন। তাদের দুজনেরই এক মত, মানুষের সামগ্রিক সুস্থতার দুটি প্রধান অংশ হল শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা। আর এ দুটির কোনটার ব্যাপারে কোনো আপোষ করা উচিত নয়। 

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মানসিক সুস্থতা ব্যাপারটা খুবই আপেক্ষিক। আমার কাছে যেটা সঠিক ও স্বাভাবিক মনে হচ্ছে আপনার কাছে তা পাগলামি মনে হতেই পারে। অথবা আমি হয়তো অনেক কিছু হুটহাট করে করে থাকি যেটা আমার জন্য নিত্যদিনের বৈচিত্র্য নিয়ে আসে কিন্তু আপনি দেখলে ওটাকে নির্ঘাত পাগলামি মনে করবেন। কে সুস্থ আর কে অসুস্থ সেই বিচারে যাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার। আমাদের জীবন, জগত, পরিবেশ ও পরিচিত সার্কেল নিত্য পরিবর্তীত হচ্ছে। এই পরিবর্তন এর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা ক্রমাগত বাঁধার সম্মুখীন হই, তাই নিজেদের চলার মত উপযোগী করে তোলার চেষ্টা করি। আর সেটা করতে গিয়ে, গতানুগতিক এর বাইরে আমরা কিছু কাজ করে থাকি যা কিছু মানুষের চোখে পাগলামি হিসেবে ধরা পড়ে।

মে মাসকে আমেরিকায় মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার মাস হিসেবে পালন করা হয় যা প্রথম ১৯৪৯ সালে নির্ধারিত হয়। আমেরিকানদের জীবনে মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং কুসংস্কার হটিয়ে মানসিক অসুস্থতা থেকে পুনরুদ্ধার উদযাপন করতে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।  এই মাসে মানসিক সুস্থতার ব্যাপারে সবাইকে যেমন আলোকিত করা হয় তেমনি যারা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তাদের অবিলম্বে বিশেষজ্ঞের সাহায্য গ্রহণ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়। প্রতিটি মানুষেরই উচিত নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি ধ্যান দেয়া, এই কথাটাই এই মাস জুড়ে উপস্থাপন করা হয়। এই ব্যাপারে লোকাল মিডিয়া, বিভিন্ন কর্মসংস্থা ও প্রতিষ্ঠান সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ডকুমেন্টারি ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী সহ নানা রকম আয়োজনের ব্যবস্থা করে থাকে।

এই মে মাস জুড়ে দেখা যায় সবুজ রঙের ফিতার আধিক্য। কেউ কেউ সারা মাস ধরে জামার উপর সবুজ ফিতা লাগিয়ে রাখেন এবং এর মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি তার সচেতনতার প্রকাশ ঘটান। মজার ব্যাপার হল,  আঠারোশো শতাব্দীতে এই সবুজ রংটি সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী একটা বার্তা প্রকাশ করতো যা দিয়ে বোঝানো হতো মানসিক অসুস্থতা। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এই সবুজ রং এখন মানসিক সচেতনতার সিম্বল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সবুজ রং বর্তমানে নতুন জীবন, সুস্থতা, সম্ভাবনা, সমৃদ্ধি ও অপার শক্তির প্রতিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

আমারিকান ছেলে মেয়েদের জীবনে তাদের বন্ধুবান্ধব খুব গুরুত্বপূর্ন একটি অংশ। আমি ক্লাসে বসে আমার ল্যাপ্টপে এই লেখাটি টাইপ করছিলাম আর পাশের টেবিলে কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর আলাপ শুনছিলাম। তারা একটা মেয়েকে নিয়ে কথা বলছিল। যে কিনা ইন্সট্যাগ্রামে একটা পোস্ট দিয়েছিল আর সেই পোস্টের ভিত্তিতে ঐ মেয়েটাকে ক্যান্সেল করা হয়। অর্থাৎ মেয়েটাকে তার বন্ধুবান্ধবীরা পরিত্যাগ করে। কেউ তার সাথে কথা বলেনা, যোগাযোগ রাখেনা বা তার ফোন রিসিভ করে না। সোজা বাংলায় আমরা যাকে সমাজচ্যুত বলি। এই ক্ষেত্রে মেয়েটির সমাজ হচ্ছে তার সহপাঠী বা বন্ধুদের সার্কেল। 

আমেরিকান স্কুল সিস্টেমে বা টিন এজারদের মধ্যে এই ক্যান্সেল কালচার খুব কমন একটি ব্যাপার। যে সব ছেলেমেয়েরা এই ক্যান্সেল কালচারের শিকার হয়, তাদের অনেকেই পরবর্তীতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে বা আত্মহত্যার মত সাংঘাতিক পথ বেছে নেয়। কেউ কেউ আবার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে হাতে বন্দুক তুলে নেয় এবং তার অপছন্দের স্কুল, কলেজ, অফিস বা বন্ধু মহলে গিয়ে সবার প্রাণ হরনের চেষ্টা করে। সবাইকে না মারতে পারলেও কিছু নিরপরাধ মানুষকে মারতে তারা সক্ষম হয়। অনেক সময় নিজেকেও এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হিসেবে শেষ করে দেয়। এমন ঘটনা গত দশ বছরে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম গুলোতে হর হামেশা চোখে পড়ে। যে সব হত্যাকারী তাদের নিজেদের প্রাণে মারেনা, তারা ধরা পড়ার পর নির্দিধায় শিকার করে যে তারা এই পৃথিবী ও তার মানুষগুলোকে কি পরিমাণ ঘৃণা করে। এটা অবশ্যই মানসিক অসুস্থতা। 

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্ত বয়স্কের মধ্যে একজন মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসক ও মনোবিজ্ঞানীরা চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি মানসিক অসুস্থতা নিয়ে  ক্রমাগত গবেষণাও চালিয়ে যাচ্ছে। তবুও এই দেশে মানসিক অসুস্থ লোকের সংখ্যা বাড়ছে বৈ কমছে না। পৃথিবীর দেশ গুলোর মধ্যে সুইডেন সবচেয়ে এগিয়ে আছে তাদের নাগরিকদের মানসিক রোগের সুচিকিৎসা দিতে। এছাড়াও জার্মানি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, জাপান, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড প্রমুখ দেশেও যথেষ্ট ভালো চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে, মানসিক রোগে আক্রান্ত নাগরিকদের জন্য। 

মানসিক রোগের কথা আমরা সচরাচর যেগুলো শুনে থাকি সেগুলো হল  ডিপ্রেশন, অ্যানজায়িটি ডিসর্ডার, পিটিএসডি, বাইপোলার ডিসর্ডার, এডি এইচ ডি, বর্ডার লাইন পারসোনালিটি ডিসর্ডার, স্কিজোফ্রেনিয়া ও অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসর্ডার।  তবে সবগুলোর মধ্যে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা পৃথিবীর নাম্বার ওয়ান মানসিক সমস্যা। যেই তিনশো মিলিয়ন পৃথিবীবাসী ডিপ্রেশনে ভুগছে, তাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা পুরুষের চাইতে বেশী। আমেরিকা ছাড়াও এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ডিপ্রেশনের আধিক্য বেশী। তবে আমেরিকায় মানুষ যত সহজে সাহায্যের জন্য বিশেষজ্ঞের কাছে যায়, এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তত সহজে যায়না।

আমেরিকাতে ডিপ্রেশনের কারন হিসেবে কোভিড ১৯ কে দায়ী করা হয়। এক বছর ধরে ঘরের ভিতর আটকা পড়া নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু, সবাই বিভিন্ন রকম নেতিবাচক চিন্তাভাবনা, ধ্যান ধারণার বশবর্তী হয় এবং ক্রমাগত হতাশা ও বিষাদের সাগরে ডুবে যেতে থাকে এবং নিজের উপর আত্মবিশ্বাস হারাতে থাকে। কারো কারো মতে, অতিরিক্ত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ব্যস্ত জীবনযাপনে সামাজিকতার প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেয়া, জনসাধারনকে ভীষণ ভাবে আত্মকেন্দ্রিক করে তুলছে এবং তাদেরকে নিজের ছোট্ট গণ্ডির মধ্যে আটকে ফেলছে। নিজেদের গন্ডির মধ্যে থাকতে থাকতে আমরা প্রায়শই গুলিয়ে ফেলছি, কোনটা বাস্তব আর কোনটা মনগড়া। কোনটা খাঁটি, আর কোনটা মেকি।    

এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ডিপ্রেশনের একটি বড় কারন হিসেবে মানা হয়। মানুষ এর ফেইসবুক জীবন ও আসল জীবনের মাঝে আছে আকাশ পাতাল ফারাক - এই কথাটা আমরা প্রায় সময় ভুলে যাই। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে মানুষ তার হাসি, আনন্দ, বিনোদন ও সফলতার গল্প খুব নিখুঁতভাবে ও গর্বের সাথে পোস্ট করে। যাতে ফেইসবুক বন্ধুদের কাছ থেকে লাভ, লাইক ও কমেন্টস পায়। কিন্তু তার মানে কি এই যে তাদের জীবনে আর কোন দুঃখ, বেদনা, হতাশা, ব্যর্থতা নেই। আমরা যারা মনের দিক থেকে দূর্বল বা খুব বেশী আত্মবিশ্বাসী নই, তারা খুব সহজেই অন্য মানুষের সফলতার গল্পের গভীরে তলিয়ে যাই। মনে মনে কষ্ট পাই এই ভেবে যে আমরা কেন ওদের মত ভাগ্যবান নই, আমাদের জীবনে কেন এতো সমস্যা অথচ কিছু মানুষ দিব্যি ভালো আছে। এই চিন্তাই ক্রমাগত আমাদের বিষণ্ণতার সাগরে ডুবিয়ে দেয়। 

বাঙালি সমাজে শারীরিক অসুখ বা সমস্যা হলে যে কেউ নির্ধিদায় পরিবারের অন্যান্যদের সাথে আলাপ করতে সক্ষম হয়। কিন্তু কেউ যদি কোন মানসিক সমস্যায় ভোগেন তাহলে তিনি সেটা গোপন করতে বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তরুণতরুণী বা প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই অভ্যাসটি প্রবল ভাবে বিরাজমান। এর একটি প্রধান কারন হল, মানসিক রোগের চিকিৎসার ব্যাপারে আমাদের সমাজে যে কুসংস্কার বা অন্ধ ধারণা বিদ্যমান। অধিকাংশ সময়, পরিবার পরিজন ও বন্ধুবান্ধবদের কঠিন সমালোচনার সম্মুখীন হতে হবে এই ভেবেই যে কেউ পিছিয়ে যায় তার মানসিক সমস্যার কথা কারোর সাথে আলাপ করতে। আবার অনেক সময় কেউ হয়তো জানেনই না যে তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।

আমাদের দেশে কাউন্সেলিং শব্দটা ইদানিং জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। দাম্পত্য জীবনে অসুখী হলে, সন্তান এর মধ্যে মানসিক অপরিপক্কতা প্রকাশ পেলে অনেকে মানসিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছে। তবে কম বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পারিবারিক অস্থিরতা বা চাপ, আর্থিক কষ্ট, কঠিন রোগ, কোনো ঘনিষ্ট জনের কাছ থেকে মানসিক আঘাত পাওয়া, পড়াশোনা বা কর্মক্ষেত্রে সফল না হওয়া, প্রিয় মানুষকে হারানো, এমন বহুবিধ কারন তাদেরকে বিষণ্ণতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।  বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি পিতামাতারও একটি কঠিন দায়িত্ব আছে তাদের ছেলেমেয়েদের উপর চোখ রাখা যাতে বিষণ্ণতা বা হতাশা খুব প্রাথমিক স্টেজেই ধরতে পারা যায়।  বাবামা'র উচিত সন্তানের প্রতি আরো সময় দেয়া ও বিভিন্ন ব্যাপারে তাদের সাথে খোলাখুলি কথোপকথন করা। বড়দের ক্ষেত্রে, কোন নির্ভরযোগ্য আত্মীয়  বা বিশ্বাসী বন্ধু অবশ্যই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে যার কাছে ব্যাক্তিটি তার মনের কথা খুলে বলতে পারে।  

অলস মস্তিষ্ক শয়তানের দোসর - এমন একটা কথা আমাদের দেশে প্রচলিত আছে। মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা কার্যক্রমে এই বছরের প্রতিপাদ্য হল মুভমেন্ট। আমাদের মানসিক সুস্থতার জন্য যতটা সম্ভব এগিয়ে যেতে হবে। আমরা নিজেদের যতটা সবল ও সক্রিয় রাখবো ততই আমরা মানসিক ভাবে শক্তিশালী হবো। তাই এই বছর, শারীরিক ফিটনেস বা ব্যায়াম এর উপর ভীষণ ভাবে জোড় দেয়া হচ্ছে। দৈনন্দিন ব্যায়াম এর অভ্যাস মানসিক চাপ ও স্ট্রেস লেভেল কমাতে সাহায্য করে। এমনকি বলা হচ্ছে, বাড়িতে বা কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে না থেকে একটু উঠে গিয়ে করিডোরে হেঁটে আসা বা অল্প সিঁড়ি ভাঙ্গা  শারীরিক ও মানসিক দুই ধরনের স্বাস্থ্য এর উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

আমাদের সবারই কমবেশী  কিছু পাগলামি স্বভাব আছে। তার মানে এই না যে আমরা সবাই পাগল। সাধারন বাংলা ভাষায় আমরা যেমন বলি, তিনি একটু ছিটগ্রস্ত অথবা তিনি একটু পাগলাটে। তার মানে এই না যে তিনি বদ্ধ উম্মাদ। কারো কারো ক্ষেত্রে ছোটখাটো পাগলামির বাইরেও মনের অসুস্থতা, আরও অধিক গভীরে যেতে পারে বা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। দুঃখের ব্যাপার, দুনিয়াতে মানসিক বিকারগ্রস্ত বা মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে। 

মাঝে মাঝে আমি কিছু ব্যাপার চিন্তা করে দ্বিধান্বিত হই। চারিদিকে পৃথিবী জুড়ে এতো অন্যায়, অবিচার, ব্যভিচার, পাপ, হত্যাকাণ্ড, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ। এগুলো যারা করছে, তারা কি মানসিক ভাবে অসুস্থ। নাকি যারা এগুলো সহ্য করছে বা দেখেও না দেখার ভান করছে, তারা বিবেকহীন, অসুস্থ। আত্মহত্যা করার আগে আত্মহত্যার গ্রাফিক চিত্রায়ন ইন্সটাগ্র্যামে পোস্ট দেয়া, এটা কি সুস্থতা। মানুষ মারতে যাওয়ার আগে কারন দেখিয়ে জবানবন্দী পোস্ট করা, এরা কি সুস্থ। মেয়েদের সাথে অন্যায় আচরণ করে নিজের পুরুষত্ব জাহির করে গর্বের সাথে পোস্ট করা, এটা কি সুস্থতা। নাকি আমি কি কিনলাম, কি পড়লাম, কোথায় গেলাম, আমার কি আছে, এগুলোর ক্রমান্বয় ধারা বিবরণী সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে, অন্য মানুষের জীবনে অশান্তি আর হতাশার উদ্রেক করা, এটা সুস্থতা।     

মানসিক অসুস্থতা একটি অদৃশ্য কিন্তু খুব ভয়াবহ একটি রোগ যা তিলে তিলে মানুষের জীবনী শক্তি ও বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা শেষ করে দেয়। মানুষকে বাস্তব জীবন থেকে সরিয়ে অনেক দূরে নিয়ে যায়। কিন্তু এর নিরাময় ও প্রতিকার সম্ভব যদি সেটা সঠিক উপায়ে, সঠিক সময়ে ধরতে পারা যায়। মানসিক রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে কোনো চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়ে, ওষুধ এবং রুটিন থেরাপির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। আর ছোটখাটো পাগলামি তো আমরা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে সংশোধন করতে পারি, আমাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্বাস্থ্যকর ও বয়স উপযোগী কাজ ও মন্তব্য করে।  

আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতদের মাঝে এমন কেউ কি আছে যাকে আপনি মানসিক বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে পরামর্শ দিতে পারেন। তাকে উৎসাহিত করতে পারেন এই বুঝিয়ে যে, সুস্থ থাকা প্রতিটি মানুষের ন্যায্য অধিকার। আজকের পৃথিবীতে সুস্থ মানুষের অনেক বেশী প্রয়োজন।      

Comments

  1. This is certainly a very important issue, which you have highlighted with a comprehensive write up.
    Mental health is equally important as physical health. Unfortunately, in most cases, it gets ignored as we visibility can't see it.
    The Western world is becoming more aware of nurturing mental health by seeking the right support and that is subsequently having a positive impact on our subcontinent. People are slowly becoming more open to receiving help/therapy to deal with their challenges, which is quite promising.

    ReplyDelete
  2. আমার মতে পৃথিবীতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে উপেক্ষিত বিষয়ে তুমি আলোকপাত করেছো যা পাঠকদের নতুন আলোকে চিন্তা ভাবনার সুযোগ দেবে ও তা নিরাময়ে সচেষ্ট হতে সাহায্য করবে।

    ReplyDelete
  3. সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা নিজেদের রূপকথার জীবন পোস্টায়, তারা অবশ্যই অসুস্থ। বিশ্বব্যাপী হত্যাযজ্ঞ আর শোষণের মূল হোতা রাজনীতিবিদরা সবাই মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ। ম্যাস শুটার গোছের অভাগা সম্পর্কে আমার ধারণা ওরা ভারসাম্যহীন, কিন্তু তারা শক্তিশালী হয় মানসিক বিকলাঙ্গ রাজনীতিবিদের কারণে --- বন্দুক সহজে হাতে না পেলে ছুরি বা লাঠির ক্ষমতায় সীমাবদ্ধ থাকতে পারত এরা।

    জীবন কেবলই এক যাত্রা (ভ্রমণ), শত সমস্যা/অসুস্থতা/অপ্রাপ্তি/দুঃখ/কষ্টের উপস্থিতেও হতে পারে উপভোগ্য। কিন্তু যখনই জীবন হয়ে ওঠে এক ভিন্ন অর্থের যাত্রা (নাটক), বদহজমের ঝুঁকি বাড়ে তখনই।

    ধর্মগ্ৰন্থের বাণীর কথা বললে পাবলিক মাইন্ড করতে পারে, কিন্তু একটা পুরনো জনপ্রিয় গানের কথা মনে পড়ল,

    "Dust In The Wind" -Kansas

    I close my eyes
    Only for a moment, and the moment's gone
    All my dreams
    Pass before my eyes, a curiosity
    Dust in the wind
    All they are is dust in the wind
    Same old song
    Just a drop of water in an endless sea
    All we do
    Crumbles to the ground, though we refuse to see
    Dust in the wind
    All we are is dust in the wind
    Oh
    Now, don't hang on
    Nothin' lasts forever but the earth and sky
    It slips away
    And all your money won't another minute buy
    Dust in the wind
    All we are is dust in the wind
    (All we are is dust in the wind)
    Dust in the wind
    (Everything is dust in the wind)
    Everything is dust in the wind
    The wind

    ReplyDelete
  4. Excellent in Dept insight to a major issue.

    ReplyDelete

Post a Comment