হ্যালো ২০২১

প্রায় ২০ দিন হয়েছে ২০২১ এর। তারই মধ্যে কত ঘটনার জন্ম। বিশ্ব জুড়ে একদিকে মানুষের আশা, ভরসা, কৌতূহল, বিস্ময়। অন্যদিকে হতাশা, বেদনা, আতংক, ভয়। জীবন যাত্রা যেন স্বাভাবিক হয়েও হচ্ছেনা। নতুন কিছুর প্রত্যাশা, সম্ভাবনা আর রোগ মুক্ত জীবনের আশায় সবাই দিন গুনছে। ভাবছে বছরের শেষটা যেন বছরের শুরুটার মত না হয়।

প্যান্ডেমিকের কারনে গত বছর যে যে event গুলো হতে পারেনি তার প্রায় সবগুলো এই বছরে স্থান পেয়েছে। এদের মধ্যে আছে Summer Olympics, Eurovision Song Contest, European Football Championship, World Expo 2020.  তবে অবস্থা বুঝে এগুলোর তারিখ পরিবর্তন করা হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের ভ্যাকসিন প্রোগ্রাম কতটা কার্যকরী এবং দ্রুত সম্পন্ন করতে পারবে তার উপর অনেকাংশে নির্ভর করছে সবকিছু।   

রং আমাদের কার না পছন্দ? রং বিহীন জীবন যেন প্রাণ বিহীন জীবন। প্যান্টোন কালার ইন্সটিটিউট (Pantone Color Institute) প্রতি বছর একটি বা দুটি রংকে বছরের সেরা নির্ধারণকারী রং হিসেবে নির্বাচন করে। যে রংটি  Business and Entertainment World  এ  Global পর্যায়ে আধিপত্য বিস্তার করে। যেমন গত বছরের রং ছিল নীল। এ বছর ২০২১ এর রং হিসেবে এবার মনোনয়ন পেয়েছে দুটি রং। Gray বা ধূসর এবং Illuminating বা উজ্জ্বল হলুদ রং। কিন্তু কেন এই পরস্পর বিরোধী দুটি রং? তাদের ব্যাখ্যাটি আমার খুবই মনঃপুত হয়েছে। 

ধূসর হলো পাথরের রং। তাই এই রংটি দিয়ে তারা বোঝাতে চেয়েছে শক্ত ও মজবুত ভিত্তি বা অবস্থান, যার কোনো ক্ষয় নেই। যা কিনা আমাদের জীবনে নির্ভরশীলতা এবং অবিনশ্বরতার প্রতীক হয়ে থাকবে। অন্য দিকে, সোনালি হলুদ রং আমাদেরকে সূর্যের উজ্জিবনী শক্তির কথা মনে করিয়ে দেবে। যা মানব জাতিকে দেখাবে আশার আলো। তাই সম্মিলিত ভাবে এই রং দুটি আমাদের জীবনে একদিকে নিয়ে আসবে শক্তি এবং অন্য দিকে আশা ও আনন্দ। যা এই মুহূর্তে আমাদের থমকে যাওয়া পৃথিবীর জন্য খুবই জরুরী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তাদের এই কালার ট্রেন্ডটি খুব দ্রুত বিশ্ব বাজারে দারুন প্রভাব ফেলবে। ফার্নিচার, ফ্যাশন, টেকনলজি, বাড়ির দেয়ালের রং, আসবাবপত্র, গৃহ সামগ্রী, প্রসাধনী প্রায় সব ধরনের ইন্ডাস্ট্রিতে দেখা যাবে Gray ও Yellow রং এর আধিপত্য। তাই ঘর সাজানোর জিনিস বা পরিবারের সদস্যদের জামা কাপড় কেনার সময় আপনি গুরুত্ব দিতে পারেন ধূসর এবং জ্বলজ্বলে হলুদ রং দুটোকে। অনেকের মতে এ রং দুটো যেন, শীতের রুক্ষতা, ধূসরতা কাটিয়ে উজ্জ্বল, সম্ভাবনাময় বসন্তের মাঝে প্রবেশ। গত বছরের বিভীষিকা পেছনে ফেলে নতুন বছরকে আলিঙ্গন।   

যাই হোক, লেখাটি শেষ করতে চাই ভালো কিছু কথা দিয়ে। পরিবেশ দূষণ, ওজোন লেয়ার ক্ষয়, Global Warming  এর কথা আমরা সকলেই কম বেশী জানি। বিভিন্ন সময়ের লকডাউনের কারনে ২০২০ সালে রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা কম হওয়াতে এবং কল কারখানা, ফ্যাক্টরি দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকাতে আমাদের পরিবেশে  global green house emission  অনেকাংশে কম হয়েছে। এক তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে ২.৪ বিলিয়ন টন কম বা ৭% হ্রাস হয়েছে। তাই চারিদিকের বাতাস কিছুটা হলেও পরিষ্কার, হালকা আর কার্বন ডাই অক্সাইড মুক্ত। আকাশের রঙটা অনেক জোরালো। কতদিন এমন থাকবে জানিনা। ব্যস্ত, কোলাহল নগরীর ভিড় ভাটটা বেড়ে যাওয়ার আগেই জান ভরে শ্বাস নিন। পরিষ্কার বাতাস সেবন করুন। 

মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার এটা আপনার ন্যায্য অধিকার !